Posts

Showing posts from May, 2022

মানস চক্রবর্ত্তী

Image
মানস চক্রবর্ত্তীর কবিতা মানস চক্রবর্ত্তী  ১) ঘন নিয়ে এসেছে সে  দুয়ারে দুয়ারে মন্দ্র মেঘের খেলা  অ্যাখনি বন্ধ আলোর গন্ধ  সব মেখলা ঘিরে ঘিরে  বনবন নাচে আর ঘোরে মনরো আহা   ফোঁটা ফোঁটা জল   আসে দল দল বালিকা  কী নাচে তাহার ঘাঘরা  ঝমঝম রঙ পোশাক গ্যালো যে ফেলিয়া মনরোরা মেরিলিন সব বোনেরা  পিছলে পিছলে থৈ থৈ তা তা তাতা থৈ রে  জলেতে আনিতে ভাসাতে বাসাতে বাতাসের খেলা শোন রে  দু হাতে তুলেছে নম্র শঙ্খ কে বাজাবি যেন ডাকে রে  নরম শাঁখে ফুঁ দিয়ে দিয়ে  কেমন সুখে বৃষ্টিকে আজ  সৃষ্টি সুখে  বৃষ্টিকে আজ দৃষ্টি সুখে  বান ডাকতে যাই রে  ঘন নিয়ে এসেছে যে পিঁড়ের আসন চাই রে   ২ )  এখানে বৃষ্টি পড়ছে দমকা হাওয়া মাঝে মাঝে  তোমাকে জানাতেই যেন মেঘেদের রাগ বেড়ে গ্যালো  এখানে কাদা পথ আমগাছ ভিজে যাওয়া দোয়েল ফিঙে  মাধবী দুলছে  জুঁই  ভেতরে ভেতরে কথা ফুটছে  তবু চিৎকার করতে পারছে না মেঘ  এখানে পুকুরে ভারী স্তন থেকে ফোঁটা ফেলছে  অজস্র বৃত্ত পুকুরময়  তোলপাড় করছে তাদের স্পর্শরেখায়  তোমার সোনালী কলমে  রেখাগুলো পরস্পর সমকোণ হয়ে যাচ্ছে  এই খবর দেব বলে এত জানকারি  তোমার কলমে এখনো আবছা ক্ষীণ মৃদু বিভিন্ন শব্দ লেখা যাচ্ছে  বিশ্বাস করো

মানিক বৈরাগী

Image
পুড়ে চুরুট জ্বলি আমি মানিক বৈরাগী জেগে থাকি রাতভর, আশায় আশায় কুয়াশাভোর, পোড়া তামাকের গন্ধমাখা হিমেল বাতাস ধীরে ধীরে কুয়াশার যোনি ভেদ করে আলোর কোলাহল পাখির কলরোলে দিনমণি ধীরে ধীরে জাগে মানুষপ্রাণী গন্ধরাজের সুভাষ নিতে  ভ্রমর গুঞ্জরিছে ফুলমালি আসে সবিতার কিরণে সবিতা আসেনি। পূর্ব দিগন্ত রেখায় অলৌকিক রঙমহলে হাসির ফোয়ারার হলাহল ভোর কুয়াশায় কি অদ্ভুৎ সুন্দর অপসারী হাসে সবিতা তুমি কি তেমন হাসো কুয়াশার আলো-আঁধারে?  আশায় আশায় পুড়ে যায় চুরুট, জ্বলে যাই আমি এভাবেই আলোকিত অন্ধকারে ঘুমিয়ে পড়ি। বৈশাখে বৈশাখের ছাদখোলা আকাশে মেঘের দরোজায় তুমি দাঁড়িয়ে থেকো। আগামী বৈশাখে খোলা রোদে ভিজবো, দখিনা বাতাসে এসো, আসবে কিন্তু। তারপর তপ্তমরুর রুদ্রতায় রুক্ষবক্ষে তোমার দিকে বজ্র হয়ে টোকা দিবো তোমার দরজায় মেঘেদের চিলেকোঠায় অপেক্ষায় থেকো থাকবে তো আমার জং ধরা কলকব্জা তুমি মেরামত করে দিবে যেন ঝড়োহাওয়ার বৃষ্টির দাপটে জং খাওয়া দেহ, মুহুর্তেই যেনো ঝুরঝুর ঝরে না যায়। পারবে তো বৈশাখী মেঘকুমারী। অতঃপর প্রান্তরজমিতে শিলাবৃষ্টিতে ফসলের গায়ে ক্ষতের দাগ টিনের চালে জলনৃত্য মঞ্চস্থ হচ্ছে বাঁজ পড়ছে অবিরাম বাতাসের শীৎকার ধ্বনিতে থর

অলোক বিশ্বাস

Image
কাকে বলে আমার দেশ অলোক বিশ্বাস এতগুলো ধর্ষণের পরেও কেঁপে উঠলো না দেশ। যেদিকে চিড়িয়াখানা, সেদিকে তো বেশ ভিড় । সুইমিং পুলের কাছে পা রাখার জায়গাও নেই। দেশ আরো দেশ সহকারে বিশ্ব সম্মেলনে মেতে উঠছে। ভালো কোরে বলতে পারছো না, এ দেশ তোমার। ভালো কোরে বলতে পারছি না, এ নদী আমার, এই আমার ছোটবেলার সোনাঝুরি। দেশ আরো দক্ষতা অর্জন কোরছে বিজ্ঞাপনী সিদ্ধান্তে, অপভাষায়... ## কিছু বোঝার আগেই হাততালি দিয়ে যাচ্ছে দেশ। রামায়ণে কী কী লেখা, মহাভারত ও কোরানে কী কী লেখা, ঝরঝর কোরে মুখস্থ বলে লোকেরা। খবরের কাগজ খুলতেই আরো একজন নুসরাত ধর্ষিত হয়ে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। পাশেই  বিজ্ঞাপন, দুটো ব্রা ও প্যান্টি কিনলে আরো দু'টো ফ্রি। বিজ্ঞাপন আর ভোট পাগল লোকেরা ভুলে যায় কিভাবে নুসরাতকে ধর্ষণ করা হয়েছে... ## ধর্ষণের পর আবার ধর্ষণ আসে। ধর্ষণের উৎসব লেগেছে। সন্ত্রাসে ভস্মীভূত হয়ে যায় প্রতিবাদী মানুষের ছোট ছোট বাড়ি। প্রতিবাদী কর্নারে অনর্গল ইট ছুঁড়ছে কেউ। নত হয়ে আছো ভালোবাসা।  ঘুম থেকে উঠে আরো গভীর ঘুমের কাহিনি শোনাচ্ছে আমার দেশ, তোমার দেশ।  ভোটের উৎসবে খাটো হয়ে যায় গণতন্ত্র। দেশ বলছে আরো মদ ঢালো, আরো ধর্ম খাও, আরো

কবিতা বন্দ্যোপাধ্যায়

Image
উত্তরণ কবিতা বন্দ্যোপাধ্যায়  ও কবিতা ওয়ালা , আমাকে একটা কবিতা দেবে ? একটা গোটা না দিতে পারলে টুকরো টুকরোই  দিও , আমি জুড়ে নেবো ঠিক.... তবে একটা শর্ত আছে ... সব  টুকরোগুলোই যেন  অ-সুখের হয়, এই যেমন রাগ,দুঃখ, যন্ত্রণা ,বঞ্চনার ; দু-একটা ক্ষোভ আর অনুযোগের ও ! ভ্রু কুঁচকে উঠলো ? তবে শোনো .... কষ্ট আর হাহাকারের শব্দগুলো সরীসৃপের মতো আমার শরীর বেয়ে নেমে যাবে গভীর থেকে গভীরে... আমি ক্ষয়ে যাবো , শরীরের সব রক্ত বিন্দু দিয়ে  ধীরে ধীরে সেচন করবো... তারপর পূর্ণ সময়ের সন্ধিক্ষণে  জন্ম দেবো একটা সম্পূর্ণ কবিতার , আমি তার নাম রাখব ভালোবাসা...

রবিন বিশ্বাস

Image
অনুতাপ রবিন বিশ্বাস নাক উচু ভাল্লাগে না সবাই তো একদিন ছাই হবে তবে এতো কথা কিসের? উত্তর তো দিতেই পারতে তবুও দিলে না সোনদে নেমে এল  অবেলায়। একটু দাঁড়ালে এমন কি বা ক্ষতি হতো সময় পেড়লে অনেক কিছু এখন বেশ বুঝতে পারি। একটু না হয় হাতটা ধরতে তাতে এমন কি আর দোষ হতো কোন হাত কোন দিন ফাঁকা থাকে না। পাশাপাশি একটু বসতে পারতে তাতে না হয় লোকে দু কথা বলতো কিন্তু এখন  কেউ নেই। সব কিছু মেনে নেয় কেউ কেউ মানে না কিছুই আমি যে কোথায় দাঁড়াই? কবিতা আর পড়ব না কবিতা পড়ব না আর - কবিতা পড়ে নিজেকে  রক্তাক্ত করে আবার সেই পড়ন্ত বিকেলে  মেলে ধরব না , শরীরে এখনও সেই সকালের রক্ত ঘাম মিশে আছে চোখের কনিনীকায়, এখনও তোমার সেই মূর্তি সেই অবয়ব সেই উষ্ণতা তোমাকে আমি আর ভাবব না। তোমার আমৃত্যু ভালবাসা আজ কাঁচের টুকরোর মতো আমার  গ্ৰিলের দরজায় লেগে আছে। তোমার চাহনিতে যে  মাদকতা ছিল আজ সে সবই তো ভাসিয়ে নিয়ে গেছো কোন এক অজানার ব্যানকুনিতে বোসে থেকে। তোমায় আমি আর ভাববো না- এই তো সেদিন  তোমার কথা খেতে বসে ভাবতে গিয়ে বিষম খেয়ে মরতে বসে ছিলাম  তখন তুমি হয় তো ঘুমের  গভীরতা মাপ ছিলে কোন স্বপ্ন রাজ্যে ,কে জানে? অবসাধ একদ

কৃষ্ণা মিশ্র ভট্টাচার্য

Image
এপিসোড--নীল পাইন কৃষ্ণা মিশ্র ভট্টাচার্য মেঘের কারখানার ঠিক পাশ ঘেঁষে নীল সরলগাছ দের ঠেক।বৃষ্টির উড়ালপুল পেরিয়ে পাহাড় এখন সাদা সরতাজ্ খুলে রেখেছে।হার্স ব্লু আকাশ রোদে পিঠ দিয়ে পাইনের সোয়েটার বুনছে নিজস্ব কুর্শিকাটায়--উল্টা সোজা--সোজা উল্টা--বেশ ঠাস বুনোন।হাওয়া গাড়ির কাঁচ জানালায় নাগরিক ফেসকাট সানস্ক্রিন বুলোয় শরীর-ত্বকে-কবিতা র খাতা কোল টপ বাক্সে এইসব বেত্তান্ত--ওয়েডিং রিং এর হীরে রোদ চমকায়--১০টি শাখামৃগ যূথবদ্ধ ক্ষিপ্রতায় সিনথেটিক জলবোতল গুপি করে ওক গাছের আধো সবুজ ডালে তেষ্টা মেটায়--বেড়াতে বেরিয়ে ও বাক্স-বোঝাই সাপের খোলস,নীল ঝুমকা, আইভরি চিরুণী--তীক্ষ্ণ রোদে গঙ্গা র জলে পোড়া চিতা ভষ্ম--অনল আয়তি মুখ --মোহানা কিংবা সাগরের সঙ্গম কামী অস্থিরতা য় ভেসে ভেসে ঢেউ জাগায়---সুনসান পার্কে ওজিমানদিয়াস পুড়ে ঝামা হতে হতে আ্যসাইলামের দরোজা ভাবেন। কটেজগুলো নদীর কোল ঘেঁষে--নদী টিও পাইন --ওক এর সঙ্গে ছূপাছুপি খেলতে খেলতে একটি নিঃসঙ্গ পালক কুড়িয়ে নিল--পালকটির সাথে চলতে চলতে কিছু তুলো--পালকটির গায়ে লেপ্টে রইলো--চাঁদ জোছনা মাখতে মাখতে পালক টি র গায়ে মেটামরফোসিস --জল পালক--ভাসতে ভাসতে বরবর্ণিণী গঙ্গা সঙ্গম-

মহুয়া বৈদ্য

Image
অযান্ত্রিক মহুয়া বৈদ্য ১। মহীখন্ডে গান জানো অতুল কী স্নেহভরা গান হিমঘ্ন বরফ ফাটে গলে যায় সামুদ্রিক স্নান বাতাস তুলির টানে চুপি চুপি রামধনু ছেনে ছায়াদল বানিয়েছে, যদিও বৃক্ষ ঘোরে একা তথাপি পাতার সাজ এতবেশি সঘন সবুজ জলদ কম্পন এসে মেঘমন্ত্র বাজালো সমীপে ঘোড়ার ক্ষুরের শব্দ? অনাময়! অযান্ত্রিক মীড়ে। ২। অনেক অশাখ কথা বিধিমতো ইমনকল্যাণ কোমল সকল শ্বাস একরতি বিষ, অনুপান যদিও প্রখর বায়ু ঝড়ের মতোই মৃদু লীন অধরা ব্যাপক স্মৃতি হাতড়াচ্ছে নিভন্ত সাকিন এত অবকাশ পেয়ে একমুঠো মখমলি স্বেদ কোমল ঋষভ স্বরে ভিজিয়েছে বিষাদীয় মেঘ এবার  মাটির বুকে অনন্ত ঢেউ নেমে আসে পিছল ধোঁয়ার ঘ্রাণ, আচমন, সঘন বাতাসে ৩রা সেপ্টেম্বরের কবিতা সারাদিন টব আর মাটি নিয়ে বেলা কেটে গে্ল অসময়ে চান আর দুপুরের ভাতও খেয়েছি এইবার আনমনা গান শুনে আর গান শুনে টবের মাটিতে দেব অনুপম সুরের সূচনা কালকে টবের মুখে কিছু বীজ ছড়িয়েছি,জল ঠিক চারদিন পর জাগবেই, আশায় রয়েছি ভেবেছি ষড়জ এসে নতুন পাতার কানে কানে দিয়ে যাবে ফিসফাসে নিখুঁত  স্বরের প্রণোদনা সেইমতো কান পাতি, শুনি দরবারী লাগে দোল অমল টবের পাশে একা একা জাজিম পেতেছি  হাওয়া ও গাছটি যেন 'সরগম', আবে

তুলসী কর্মকার

Image
সওদা তুলসী কর্মকার    আকাশ দিকে তাকিয়ে আকাশ কিনতে ইচ্ছে হয় চাঁদকে ধরে জ্যোৎস্না মাখতে চাই রঙ বড় বেয়াদপ মেঘেরা শয়তানের তুতোভাই পর্দার আড়ালে বড়দার ফিসফিস  আকাশ কার কাছে কেনা যায়?  যেখানে একটা সূর্য আঁকা আছে কলসির ভেতর রাখা আছে আলো  ঝলমলিয়ে উঠছে অন্ধকার তুমি বলছ আরও নীচে  আমি তখন মাথা নীচু করি তারা খসতে থাকে আপন খেয়ালে...... রেখাচিত্র  পায়ের নিজস্ব একটা প্রতাপ আছে। যতবেশি পা একই দিকে চলে যায় ততবেশি রেখা প্রকট হয় যা ক্রমশ পথ হিসেবে পরিচিতি পায়। পথের ধারে কতশত সংকেত জমতে থাকে। সমীকরণ আঁকে মন। সুদূর বন। গাছেরা হাওয়ার তালে গা দোলায়। সকাল দুপুর রাত তোয়াক্কা না করে পুষ্টি বৃদ্ধি হয়। সৃষ্টি ধ্বংস লীলা চলে। ওইদিকে কয়েকজন মেয়ে কাঠ কাটে। জ্বালানি হিসাবে কিছু পয়সা অর্জন করে। ব্যাচকুল বনবেলা রকমারি মাশরুম সময়মতো পাওয়া যায়। মহুল বাদাম শাল নিমের মনোহারী বন। কিছুকিছু গাছ বেশ বয়স্ক। এক একটা গাছের তলা খুব পরিষ্কার। পলিথিন খবরের কাগজ সোডার বোতল দেখলেই মনে হয় এখানে মানুষের নিয়মিত যাতয়াত আছে। কিছু ঝোপ আবার এতো নিরিবিলি ও ছায়াময় যার পাশে নিরোধকে বেসামাল অবস্থায় দেখা যায়। শিহরণ বইতে থাকে। কোথাও গর্ত কোথাও শুকন

নীলাব্জ চক্রবর্তী

Image
ভাষা অবধি নীলাব্জ চক্রবর্তী কাট। বড় ঘন হচ্ছে এই রৌদ্রসম্পর্ক। যেভাবে ফল এক ক্রিয়া। লিপিত। স্মৃতি অর্থে ভুলে যাওয়া কন্ট্রোল ভল্যুম। স্বাদকোরক জুড়ে ফেঁপে ওঠা বাদামী ক্যালেণ্ডার। স্পেস। অথচ ফ্রেসকা সাবানের উড়তে থাকা বিজ্ঞাপনগুলোকেই আমরা দুপুর বলে ভেবেছিলাম কখনও। সুর একটা শরীর বলে ভেবেছিলাম। স্থির। ধোঁয়ার ভেতর আমি তোমার নাম। সারাদিন পড়ে যাওয়া। লো-অ্যাঙ্গেল থেকে একটার পর একটা পালক। গ্রামাফোন। ছায়ার অধিক এই ঋতু। তোমার ফ্রেমের যোগ্য একটা উচ্চারণ। ভাষা অবধি চুপ করে আছে এই কাগজের টুকরো। এইমাত্র একটা মানচিত্র বইছে... অর্থের ভেতর ভেতর জোক পে জোক ভিনিয়ে গাস করছে গ্রু শব্দে অর্থের ভেতর ভেতর জড়িয়েমড়িয়ে তোমাদের এই কাগুজে শহর ও ওঁ পবিত্র ক্ষুধা একটাই অপ্রমিত স্বপ্নের ভেতর পেনিট্রেট করতে করতে বারবার কার জিভটা খুঁজছে...

বিশ্বজিৎ দেব

Image
আত্মবিষ  বিশ্বজিৎ দেব এসো আত্মবিষ আমরা উপুড় হয়ে শুই হলদে রঙের পাতাটি মত স্বপ্নচ্যুত ক্লোরোফিল.. অভিন্ন কথ্যভাষার মতই  এরা সব রয়ে গেছে, অবিকল গানের মুখোশ  বনপথ, চামড়ায় উদাস দুপুর মাথা নীচু বিয়োগের রীড  আমাদের এথেকেই পরস্পর দূরত্বফলক  মুখ ফিরিয়ে থাকা রোমান হরফ অকপট পাথরের অনুবাদগুলি এসো অসীমের পথ, দুজনের  নীল সাদা টিকিটের ঘর এসো টয়ট্রেন , প্রোটিনের নিভাজ সরনী  নৃত্যকলা  বায়ুপ্রকল্পের মাঠ ও কর্কটক্রান্তি পেরিয়ে এসেছে সে, পায়ের নূপুর উড়িয়ে আমাদের হৃদবিগলিত চৌমাথা  বৈঠকের সেঁকা তন্দুরি, বহুকোষী ধাবা  সেদিকেই নামিয়ে রেখেছে মর্মর, ঠান্ডা মোড়ক  পার্শচরিত্র মোড়া পলিথিনগুলি মড়কেও মরেনি সে, ধর্মভীরু  চামড়ার বিনম্র কালশীটে শুধু আংশিক পাঠোদ্ধারকৃত এসবের গল্প বলা শেষে আলাদা হয়েছে নদী উপনদী  গ্রাম ধোয়া আষাড়ের জল, নৃত্যকলা  শবের সাকিন অর্থবছর ভাঙা সাঁকোটিও জুড়ে যাবে নতুন অর্থবছরে  জল এসে ঢুকবে পাশের গন্ধর্ব পাড়ায় টানা মরশুম যেখানে পৌঁছতে পারেনি মৌসুমীবায়ু  কঙ্কণ কিঙ্কিণি  বায়ুপ্রকল্পের ঘরে এই নিয়ে আষাঢের প্রেরণার গান,উপুড় গাত্রবরণ সামান্য বৃষ্টিতেই বিগলিত  সর্বাঙ্গের  বিনয়ী

নীলাশিস ঘোষদস্তিদার

Image
সহ-সম্পাদক নীলাশিস ঘোষদস্তিদার  পার্কটাতে বেশ মরশুমী ফুলগাছ টাছ লাগিয়েছে, বেশ বাহার হয়েছে, মনে হল অম্বরের। চাকরিজীবনে নতুন দিল্লিতে যেতেন সংসদ মার্গের অফিসে। শীতে বসন্তে ল্যুটিয়েন্স দিল্লির পার্কে পার্কে ফুলের বাহার দেখে দিব্যি লাগত বটে, তবে ওই পর্যন্তই। নিজের শখে বাগান করা বা গাছগাছালি সম্বন্ধে জ্ঞান অর্জন করা হয়নি, ইচ্ছেও জাগেনি। হ্যাঁ, তাঁর স্ত্রী কমলা গাছ-অন্ত প্রাণ এবং অতিথি মাত্রেই বাড়িতে কমলার করা একফালি বাগানের প্রশংসা করে। এইখানেও কমলা তাঁর চেয়ে এগিয়ে, বলেন তাঁর সাংবাদিক বন্ধু দীপ্যমান। সম্পাদক অম্বরকে সম্পাদনার কাজে তো বটেই, লেখালিখির জন্য হরহামেশা কমলার দ্বারস্থ হতে দেখেই এটা বলেন দীপ্যমান। ডিগ্রির হিসাবে, পেনশনের অঙ্কে, বংশগৌরবে যেমন, সাহিত্য-সংস্কৃতির প্রতিটি ধারায় কমলার ব্যুৎপত্তি অম্বরের চেয়ে যে বেশি কয়েক দশকের বন্ধুত্বে সেটা জানেন দীপ্যমান। এই যেমন সেদিন দিল্লির সঙ্গীত রিভিউতে বিদুষী অমিতা মিত্রর অনুষ্ঠান নিয়ে অম্বর যেটা লিখেছেন, তা প্রায় পুরোটাই যে কমলার লেখা তা দীপ্যমানের চেয়ে ভালো কে জানবে। গানবাজনা সম্বন্ধে অম্বরের ধারণা খুব আবছায়া। রাগরাগিণী সম্বন্ধে অজ্ঞ বললেই হয়।

শাশ্বতী গাঙ্গুলী

Image
অনতিক্রম্য  শাশ্বতী গাঙ্গুলী ১ অনতিদূরে মৃত্যু দাঁড়িয়ে আছে,জীবনের সাথে তার একচুল দুরত্ব আজ।মৃত্যু বুঝি জীবনকে ভালোবাসে? তাই এত গাঢ়  আলিংগন।জীবন যে মৃত্যুকে চায়না।তার যে অনেক কাজ বাকি পড়ে আছে,মৃত্যু সে কথা বোঝে কই? ছেড়ে যেতে তার মন চায় না যে,এ কেমন মন? যে ভালবাসা বোঝেনা? জীবন অনেকবার মৃত্যুকে বলছে সে কথা।তারপর? একদিন আসবেই  যখন জীবন মৃত্যুকে একা করে চলে যাবে জীবনের পথে।মৃত্যুর সাথে তিলে তিলে দুরত্ব বাড়ছে তার,বাড়াতেই হবে। ২ নিঃস্তব্ধ  প্রহরগুলো মাথা রাখে কাঁধে।ক্লান্ত চোখের পাতা।রোজই মৃত্যু গুনে নেওয়া, শূণ্যপুরে ক্রমাগত একা হয়ে যাওয়া।পৃথিবী প্রহর গোনে, আমিও।একবুক হাহাকার নিয়ে সূর্য  ওঠে তবু। মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকা সব ঔদ্ধত্যের  পরাজয় বলে আমি নিরাময় চাই, আমাদের পূর্ণ  মুঠি থেকে একমুঠো চাল না-হয়  দিলাম। দেবতার  পায়ে ফুল নয়,নিঃশব্দ ধ্বংসের পদতলে এ অঞ্জলি প্রার্থনা হোক। আসুক স্বপ্নের ভোর, তখন আবার,  তোমার হাত ধরে হেঁটে নেব আরো একবার। ৩  তুমি যে জানলা দিয়ে সোনা রোদ দেখো, সে জানলা আমার ঘরে নেই।আকাশকে দেখে তুমি যখন ভাবো আহা কত নীল, চোখ ভরে যায়।ঠিক সেই সময় আমার পেটে মোচড়ে ওঠে খিদে,মাথার  ওপ

শম্পা ব্যানার্জী

Image
ফরাসি অনুরাগী রবীন্দ্রনাথ। একটা ছোট্ট প্রয়াস! শম্পা ব্যানার্জী বুঁ জুর আ তুস। ভুজ আলে বিঁয়া? ফরাসিতে জিজ্ঞেস করছি, কেমন আছেন সবাই। কিন্তু কেন?  তাহলে বলি গল্পটা। পিছিয়ে যাচ্ছি বেশ কয়েকটা বছর।  সালটা ছিল 2014, অক্টোবর মাস লক্ষীপূজোর ঠিক দু'দিন আগে, আমি দাড়িয়ে আছি পন্ডিচেরীর সমুদ্র সৈকতে, বীচ অফিসের ঠিক সামনে। তখন বিকেল পাঁচটা হবে, সাথে আমার আজীবন আশ্রমিক কাকু, তিনি  পন্ডিচেরী আশ্রমের একজন সাধক। বিগত তিরিশ বছর ধরে, ওঁর ঠিকানা আশ্রম। উথাল-পাতাল সমুদ্রের ঢেউ, আদিগন্ত সমুদ্র, ঢেউয়ের গর্জন, হালকা ঝোড়ো হাওয়া, সব মিলেমিশে কেমন যেন এক মন কেমন করা পরিবেশ। হঠাৎ দূরে চোখে পড়লো সমুদ্রের মাঝে খানিকটা ভাঙা জেটির অংশ। মনেহয়, সবটুকু নিয়েও হার মেনেছে সমুদ্র। তাই ওই জেটির ভগ্নাবশেষ আজও দৃশ্যমান। আমি জিজ্ঞেস করলাম, আমার কাকুকে ওই আধভাঙ্গা জেটির সম্পর্কে। উত্তরে, আমায় উনি যা বললেন, তা শুনে মুগ্ধ হয়ে গেলাম। আনন্দে দু'চোখ ভরে গেলো জলে। শুনলাম, 1928 সালের 29শে মে  কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এসেছিলেন পন্ডিচেরীতে।  ওই জেটিতেই জাহাজ থেকে অবতরণ করেন তিনি। কয়েক ঘন্টার সাক্ষাৎ ছিল ঋষি শ্রী অরবিন্দের সাথে। বন

শাশ্বতী নন্দ

Image
আমি আমরা সেফটিপিন শাশ্বতী নন্দ চণ্ডীপাঠ না করুক তবু, চটিজুতোর বিশ্বাসঘাতকতা থেকে বোতামের উধাও হওয়া কত না দুর্দৈবে হাঁফছাড়া ইস্তক, প্রাণ ঢেলে সেবা করে গেছে আজীবন। অথচ, বাঁকাচোরা জং ধরা ডাস্টবিনে পড়ে এখন। ও কি প্রতিশোধ নেবে! ভয়ার্ত প্রহর কাটে সে নিয়তি কল্পনায় প্রতিক্ষণ। করমর্দন বাড়িয়েছিলে হাত ঠিকই ধরিনি তবুও, জানি সরিয়ে নিতে পার যে কোন বসন্তে, বর্ষায়। শুধু তো অচেনা নয়, চেনা কিছু করমর্দনও বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে যে কোন অসতর্ক মুহূর্তে। তবে কিনা জানাই তো সবটাই অভিনয়। তবে কিনা– ভালো অভিনেতা হতে হলে মিশে তো যেতেই হয় চরিত্রের চাহিদায়। আর কেটে গেলে হ্যাংওভার পর পর নিয়ে যেতে হয় আরো কটি চরিত্রে অভিনয়ের– আরো কটি প্রস্তাব।

সুকৃতি সিকদার

Image
আমার পিঁপড়ে জন্ম সুকৃতি সিকদার আপাতত দুঃখের বিষয় ডাইনোসর হারিয়ে গেছে, তেলেরও বেড়েছে দাম খুব। কোথায় আমুল দুধ আর তার নিচে চিনির কৌটাটি  হয়তো সামান্য ফাঁক  রয়ে গেছে ব‍্যস্ততার ফাঁকে। একটা পিঁপড়ে মেরে আর কতটুকু তেল পেতে পার! তবু এই পিঁপড়ে জন্ম আহা দরজা জানালা বন্ধ সব, তাও ঠিক ঢুকে যায় বউদির চায়ের দোকানে। ২. যতটা সে ছোটো ঠিক তত বড়ো আবহাওয়াবিদ তবু সে শোনে না ফালতু প্রশংসা কখনও। অকারণ পায়ের তলায় ব‍্যথা হলে আকাশ মেঘলা হয়, আমার পকেট ফুটো হয়ে গেলে শুধু নখের কারণে স্বজাতিরা বলে, এইবার বৃষ্টি হবে। জারুল নদীর পাড় ছুঁয়ে গ্রীষ্মকাল কাত হয়ে আসে তারপর। রাধাচূড়া ডাকে মাঝেমাঝে মধু চেটে করে দিতে ফাঁক। আমি তার পাপড়িতে শুয়ে হাজার বছর ধরে হাওয়ায় দুলিয়ে ছোটো পাছা… ভাবি, এই পিঁপড়ে জন্ম আহা! সামান্য চিনির দানা মুখে  মিষ্টির পাহাড় মনে হয়।

রেখা নাথ

Image
এক এহসাস/গুলজার  রেখা নাথ সোচতা হুঁ দোস্তোঁ, পর মুকদমা কর দুঁই ইসি বহানে তারিখ পর  মুলাকাত তো হোগী ! জ্যায়দা কুছ নহী বদলতা উম্রকে সাথ বস্ বচপন কি জিদ সমঝৌতৌঁ মে বদল জাতী হ্যায় । তু কিতনী ভী খুবসুরত কিউঁ ন হো এ্যায় জিন্দগী খুশমিজাজ দোস্তোঁ কে বগ্যার  অচ্ছি নহী লগতী । মেরী লিখি বাতোঁকো  হর কোই সমঝ নহী পাতা কিউঁকি ম্যাঁয় এহসাস লিখতা হুঁ । ঔর লোগ অল্ফাজ পঢ়তে হ্যাঁয় । লফ্জোঁকে ভী জায়কে হোতে হ্যাঁয়, পরোসনে কে পহলে চখ ভী লেনা চাহিয়ে । অক্সর বহী দিয়ে  হাথোঁ কো জলা দেতে হ্যাঁয় জিনকো হম হবা সে  বচা রহে হোতেঁ হ্যাঁয় ব্যাঠ জাতা হুঁ  মিট্টি পর অক্সর, কিউঁকি মুঝে অপনি  ঔকাৎ অচ্ছি লগতী হ্যায় চুম লেতা হুঁ  হর মুশকিলোঁ কো ম্যায় অপনা মানকর জিন্দগী ক্যায়সী ভী হ্যায় আখির হ্যায় তো মেরী হী ! থম কে রহ যাতি হ্যায়  জিন্দগী জব জম কে বরসতী হ্যায় পুরানী য়াদেঁ---! মুখ্তসর সা গুরুর ভী জরুরী হ্যায় জীনে কে লিয়ে  জেয়াদা ঝুক কে মিলো  তো দুনিয়া পীঠ কো  পায়দান বনা লেতী হ্যায় । কোই সুলহ করা দে অব   জিন্দগী কী উলঝনোঁ সে  বড়ী তলব লগী হ্যায় আজ মুস্করানে কী ! হাথ ছুটে ভী  তো রিশতে নহী ছোড়া করতে ওয়ক্ত কী শাখ সে  লমহেঁ নহী তোড়া

জয়ন্তী অধিকারী

Image
 একটি নীল মুক্তা, সিদ্ধান্ত শিরোমণি ও লীলাবতী জয়ন্তী অধিকারী নিদারুণ ধর্মসংকট ! উজ্জয়িনী মানমন্দিরের প্রধান জ্যোতির্বিদ ভাষ্করাচার্য প্রচন্ড মানসিক শক্তি প্রয়োগ করে নিজেকে সংযত রাখলেন, অনুভব করলেন তাঁর হস্তদ্বয় কম্পিত হচ্ছে, ললাটে জমছে স্বেদবিন্দু। সম্ভাব্য পাত্রপক্ষের সম্মুখে তিনি যে ভয়কর কথাটি উচ্চারণ করতে যাচ্ছেন, তা পৃথিবীর কোন কন্যাদায়গ্রস্ত পিতা এর আগে উচ্চারণ করেছেন কিনা সন্দেহ। “মহোদয়গণ, আপনারা আমার কন্যাকে অসামান্য স্নেহের সঙ্গে পুত্রবধূরূপে মনোনীত করেছেন, এটি আমার ও আমার পরিবারর অভাবনীয় সৌভাগ্য। কিন্তু একটি সুকঠোর সত্যকথা আপনাদের কাছে নিবেদন না করলে আমি ধর্মভ্রষ্ট হব। দুর্ভাগ্যজনক সত্যটি এই, আমার কন্যার বৈধব্যযোগ আছে, গণনা করে দেখেছি বিবাহের অতি অল্পসময়ের মধ্যেই তার স্বামীর মৃত্যু অবশ্যম্ভাবী।” অকস্মাৎ কক্ষমধ্যে যেন বজ্রপাত হল, সকলে হতবুদ্ধি ও বাকরুদ্ধ হয়ে আচার্যের মুখের দিকে চেয়ে রইলেন। বেশ কিছুক্ষণ পর, কোনপ্রকারে আত্মসম্বরণ করে পাত্রের পিতা বললেন, "আচার্য, সেক্ষেত্রে এই বিবাহ হওয়া অসম্ভব মনে করি।” “আপনারা আমার অসম্মান করছেন!” জ্যা মুক্ত শরের মত তীব্রবেগে উঠে দাঁড়ালেন ভ

উমাপদ কর

Image
ফেরিওয়ালার সেলুলয়েড উমাপদ কর পা বাইরে যেতে-যেতে খোঁজে। নানা ঘাট। স্নানঘাট, ফেরিঘাট, শ্মশানঘাট। ঘাট সাধারণ ধরে (কমন নিলে) স্নান, ফেরি, শ্মশান। স্নানে বেলা গড়ায়। ফেরি শেষে বিবাহআসর। শুনশান শ্মশান আমাদের পাড়াতেই বসবাস করে। তর্কের ধাপগুলি স্নানঘাটে শুয়ে। নামিয়ে গভীরে নিয়ে যায়। বিষয়ের পাঁপড়িগুলো এপার-ওপার সারে ফেরিকাঠে হেলান দিয়ে। শ্মশানের কুকুর গন্ধ শুঁকে-শুঁকে বমাল আমাকে ধরে ফেলে। এত জমিয়েছি, সময়ে ফেলতে পারিনি গৃহঋণে বকেয়া থেকেই যায়। বাড়ির কাজ শেষ হয় না ইহজীবনে। ঘুলঘুলিতে জাফরি বসানোর কথা কবে সেই বাসি হয়ে যায়। একবিন্দু আলো এলে, ধ্যানে বসা যেত ত্রিনয়নে নিয়ে। স্নান এসো, মুখে পুলিপিঠে। ফেরি সরে সরে যাও ফাগুনের পলাশে শিমুলে। শ্মশানের চুপচাপ নেমে এসো ঘুলঘুলি বেয়ে। অশেষের শেষ কবেই বা অনুভবে আসে! ০২-০২-২০২২ ফুলের ভেতরে বাস করে দেখেছি, তার সুন্দর দেখা যায় না। বাইরে বেরোতে চাইলে এক জাল আমাকে জড়ায়। সুন্দর দেখি না। সুন্দর তবু তো আছে, থাকে। ফুলের সুন্দর আমাকে প্রশ্রয় দিয়ে সুন্দর করে। এক ফুলের সুন্দর ঝরে গেলে আরেক ফুলে বাস। আমার শুধুই চলা সুন্দর অফুরাণ নিসর্গের অসুন্দর কিছু কি আছে! অপার অনিন্দ্য লো। ঘ

দেবাশিস সাঁতরা

Image
 অন্ন  দেবাশিস সাঁতরা 1 মনেপড়ে সে সব স্মৃতি ? তোমাকে দু-মুঠো পাবার জন্যে, অন্ধকারে দীর্ঘ লাইন আকাশে যুদ্ধের সাইরেন ডেকে যায় অবাক চোখে দেখি শুভ্র শরীরে তোমার আজও অশনিসংকেত, দেশ ভাগের গ্লানি তবু তোমার অপাপবিদ্ধ সৌরভে দুলে ওঠে  আশৈশব  মনেপড়ে যায় সোনালী দিনগুলোর কথা সকাল সাড়ে সাতটা, ব্যাস্ত হাতে বাবাকে ভাত বেড়ে দিচ্ছেন মা আমি খেলতে খেলতে বর্ণমালা থেকে ঝুকে পড়েছি গরম ভাতের থালায় একটু ঘি, নুন ও কাঁচালঙ্কা সহযোগে ধোঁয়াওঠা ভাতের গন্ধ কী অপূর্ব সৌরভ ! বাবা খেতে খেতে ঘি মাখা ভাত তুলে দিচ্ছেন আমার মুখে, যেন অমৃত মা হাতপাখা নিয়ে বসেছেন পাশে সহসা আকাশ-বাতাস কাঁপিয়ে সাইরেন বেজে ওঠে বিশ্বযুদ্ধের নয়, জীবনযুদ্ধের। 2 আজও খেতে বসে মেয়েকে বলি দেখো, থালার পাশে যেন ভাত না পড়ে পড়লে কুড়িয়ে নেবে স্বপ্না কে বলি, দেখবে কুকারের গায়ে যেন একটাও ভাতের দানা লেগে না থাকে। আমার পূর্বস্মৃতি মনেপড়ে যায়, বাবা আমাদের বলতেন অনেক সময়, সামনে দাঁড়িয়ে দেখতেন মাটিতে ভাত পড়লো কি না পড়লে, তা সসম্মানে কুড়িয়ে খেতে হতো মা কে বলতেন, তপু হাঁড়ির গায়ে যেন ভাত না লেগে থাকে। আমরা দূর্ভিক্ষ দেখিনি, বাবা, জ্যাঠাদের মুখে গল্প শুনেছি রাজপথে মৃ

জয়শীলা গুহ বাগচী

Image
 উহ্য  জয়শীলা গুহ বাগচী রাতের টুকরো থেকে ভেসে আসছে উচ্চারিত মোটা দাগের ঘুম। দু’হাতের হতবুদ্ধি সময় ক্রমশ বেড়ে উঠছে। দেখছি... রাতের গায়ে ঝলমল করছে ফেলে আসা জামা-কাপড়ের বাতাস, রাস্তার আনকাট নিখিল। এইসব রাতবিরেতের ভাবনা থেকে উঠে বসে চুল আঁচড়াই । আঁচড়াতে গিয়ে খসে পড়ে দৃশ্যপট , গন্তব্যের অক্ষর। চুলের গোড়ায় গোড়ায় জমে আছে কাল্পনিক আমি। ধীরে ধীরে সেসব আঁচড়ে আঁচড়ে ফেলতে থাকি নীচে। মাথা হালকা হলে ধনে স্বাদ গুছিয়ে রাখি। গুছিয়ে রাখি শীতকালের জমাট রক্ত আর এক আঁটি বেঁচে থাকা দুপুর। তারপর যা থাকে তা হল অনিন্দ্য শূন্যচিন্তা যা খবরের কাগজের মতোই দেখানো মিথ্যে। মিথ্যের ওম দিয়ে ফ্রিজের ভেতর পরের দিনটি সেদ্ধ করি।  যাপন হাত পায়ের নখে অথবা দাঁতের ফাঁকে আটকে থাকে ফুরিয়ে যাওয়া দিন। খুঁচিয়ে তুলতে  গেলে রক্ত পড়ে। রেখে দিলে শিরদাঁড়ার ভেতর ছড়িয়ে যায় ব্যথার চড়াই উৎরাই । দু’হাতে তখন পাহাড়পর্যায়ের টুকরো দৃশ্যের ভার, অজস্র স্থান, কাল, পাত্র। যে কোন উচ্চতায় বাজারের ভিড় ঠেলে এগিয়ে যাই অথবা নেমে আসি শুরুর বিন্দুতে। রোজ স্নায়ুতে আতশবাজির রোশনাই... । রোজ কপালের মাঝে কোমাচ্ছন্ন রাত। হাওয়া খুলে দেখি পাহাড়ের গায়ে পাইন বনের ভে

রত্নদীপা দে ঘোষ

Image
হাউজবোট রত্নদীপা দে ঘোষ জলীয় টিউন   একটি স্বগতোক্তি       ভঙ্গিমা বলতে         ছুরি কাঁটা ঢেউ            ঘাইমারা বাঁচার মতো বাঁচতে    আর কী চাই?       চামচ বোঝাই          জলের কূল            কূলের কিনারা             দূরচাঁদ     দুরন্ত ইলিউশন        একশো আট!        নাকি আরো বেশী          সাক্ষাৎ দেবী রিয়েলিটি একটু উজ্জ্বল!     সামান্য অপটিক্যাল !       সার্চলাইট জড়ানো        মোমবাতির কোমর খুবঘাম   প্রতিটি মোচড়       তরলীয় ডার্ক এইদিক চরম মধুজা    আর ওই দিকটি        অবিবাহিতা ইভনিংপুর     হাসি আর রহস্য       নাচবতী ইভনিংপুর          পূর্ণফুলেল          মেকআপহীন            দ্রবণ জলসানো যার যেমন পছন্দ ঠোঁটে তুলে নিলেই ঘ্রাণ জেল্লা দারুএলাচ  চিনিদারু      সুর-না-লাগা ড্রীম        ব্যক্তিগত চুমুলীন           ষোলোআনাই             অচেনা কাহার                 বা সমূহচেনা

রীতা বিশ্বাস পাণ্ডে

Image
কাজললতা রীতা বিশ্বাস পাণ্ডে আজকে আমি একটি কাজল লতার কথা বলবো । কাজললতাটার বয়েস একশো    বছরের ও বেশী। একশো বছরের ও বেশী কেন? তবে কি এটা আমার নয় অন্য কারো ? হ্যাঁ, এটি আমার ঠাকুর্মার ছিল।  কি ভাবে এটি ঠাকুর্মা থেকে আমার কাছে এলো? সে কথাতেই আসছি।  আমার বাবার জন্ম ১৯১৪ সালের ১৪ই জুন। আর সেখানেই প্রশ্ন। বাবার জন্ম যদি ১৯১৪ সালে হয়ে থাকে তবে কাজললতাটা আমার ঠাকুর্মা নিশ্চয় ১৯১৪ সালে   পাননি। কারণ বাবার কাছে শোনা ঠাকুমার বিয়ে  হয়েছিল কুরি বছর বয়সে। সেইসময় এই কাজল লতাটা ওনাকে দেওয়া হয়। এখন চলছে ২০১৯ সাল।    তারমানে ঠাকুর্মার জন্ম হয়েছিল ১৮৯৪ সালে। আর ১৯১২ সালে উনার বিয়ে হয় তৎকালীন চট্টগ্রামের বিখ্যাত জমিদার  রায় বাহাদুর বিশ্বাস বংশের বৃটিশ গর্মেন্টে  চাকরী করা অফিসার উকিল ছেলে  মনোমোহন বিশ্বাসের সাথে।  দেখতে অপরূপ সুন্দরী মনোরমা দেবী। ঢাকার ক্যাথোলিক স্কুল থেকে পড়াশুনা করা।    বাবারা তিন ভাই এক বোন।  বড় ভাই মানে আমার জ্যাঠামশাই ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ  করেই চলে গিয়েছিলেন কান্দাহারে। তারপর উনি আর দেশে ফেরেননি।সে অন্য গল্প।  এখন আসা যাক  কাজললতার গল্পে। ১৯১২ সালে ঠাকুর্মার বিয়ের ডালা যখন সাজানো হল তখন ন